রবিবার, ২ এপ্রিল, ২০২৩

 গল্প/কাহিনি: "টিউশনি" (পর্ব:৩)

-------------------------------------------
মিথিলার কপালে এবার চিন্তার ভাজ পড়লো। আর উপায় খুঁজে না পেয়ে মিথিলা এবার তার মা কে শেয়ার করলো ব্যাপার টা। মিথিলার জীবনে তার মা ই তার বেস্টফ্রেন্ড। সব শুনে মা ও ব্যাপার টা উড়িয়ে দিলো। তেমন পাত্তা দেয়নি।
এভাবে ই দিন কেটে যায়। মিথিলা আর মিসেস রায় এর সম্পর্ক টা আস্তে-ধীরে স্বাভাবিক হয়ে যায়৷ একদিন মিথিলা মজার ছলে ইচ্ছে করেই কৌতুহল বশত চিন্তা করে, আজ সে বার্গার খেতে চায় এবং যাচাই করে দেখবে মিসেস রায় সত্যিই মাইন্ড রিডিং করতে পারেন কিনা।
মিথিলা যথারীতি সৈকত কে ওদের বাসায় পড়াচ্ছিলো। পড়ার ফাঁকেই মিসেস রায় টেবিলের একপাশে নাস্তার ট্রে রেখে হাসিমুখে চলে গেলেন।আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, মিসেস রায় আজ বার্গার ই দিয়েছেন।
মিথিলা সেটা খেয়ে মিসেস রায় কে ডাকলেন এবং জিজ্ঞেস করেই বসলেন, "আপা, আজ বার্গার খেতে ইচ্ছে হচ্ছিলো। কিন্তু আপনি তা কি করে বুঝলেন?"
মিসেস রায় মুচকি হেসে বললেন, "আমি তো জানিনা। মনে হয় বোন ডেকেছি আপনাকে। এজন্যই বুঝে ফেললাম।"
মিথিলা স্বাভাবিক বলেই ধরে নেয়। কিন্তু কিছুদিন পর এক রাতে মিথিলার সাথে অদ্ভুত কিছু ঘটে।
মিথিলার লেখালেখির অভ্যাস ছিলো। প্রতি বৃহস্পতিবার রাতে প্রায় অনেক রাত পর্যন্ত মিথিলা গল্প/কবিতা লেখালেখি করতো। কারণ, পরদিন শুক্রবার তাই৷
মিথিলা তার বেড রুমের দরজা বন্ধ করে একমনে লিখছিলো। ভেতর থেকে লক করা দরজা। রফিক পাশেই চোখ বন্ধ করে শুয়ে ছিলো। তবে গভীর ভাবে ঘুমায়নি। আজ মিথিলার লেখার টপিক ছিলো "কবর" নিয়ে। রাত তখন প্রায় ২টা। হঠাৎ করেই বেডরুমের দরজা একটু শব্দ করেই আস্তে আস্তে নিজ থেকে খুলে গেলো।
মিথিলা আঁতকে উঠে ডায়েরিটা একটু দূরে ঠেলে দিলো আর হাতের কলমটা মাটিতে পড়ে গেলো। এই প্রথম মিথিলার কোনো সুপারন্যাচারাল কিংবা অদ্ভুত কিছুর অভিজ্ঞতা হচ্ছে।
মিথিলা পাশ ফিরে চেয়ে দেখে রফিক এক দৃষ্টে সোজা হয়ে শুয়ে আছে আর সিলিং এর দিকে তাকিয়ে আছে। মিথিলা রফিক এর গায়ে হাত রেখে বলে, "রফিক, এই রফিক! কি হয়েছে তোমার?"
রফিক কিছু না বলে আবার চোখ বন্ধ করে ওপাশ ফিরে ঘুমিয়ে যায়।
কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, এইবার দরজাটা আবার "ধুপ" শব্দে লেগে যায়।
মিথিলা এবার জোরে ধাক্কা দেয় রফিক কে। "রফিক, প্লিজ উঠো। আমার ভয় করছে।"
রফিক এবার হন্তদন্ত হয়ে উঠে মিথিলা কে জিজ্ঞেস করে, "কি হয়েছে মিথিলা? খারাপ স্বপ্ন দেখেছো?"
মিথিলা বলে, "আরে আমি তো ঘুমাই ই নি। দরজাটা খুলে আবার বন্ধ হয়ে গেলো। আর তুমি উপরের দিকে তাকিয়ে ছিলে। নিশ্চয়ই কিছু একটা আছে এখানে।"
রফিক মিথিলাকে ধরে বলে, "রিলাক্স। কিচ্ছু হয়নি। আমি বোধ হয় ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখছিলাম। আর দরজাটা তো বাতাসেও খুলে আবার লেগে যেতে পারে। দেখো, বাইরে ঠান্ডা বাতাস বইছে।"
মিথিলা খেয়াল করে দেখলো, সত্যিই বাতাস হচ্ছে বাইরে। কিন্তু ও তো লক করে রেখেছিলো ভেতর থেকে। যদি দরজা খুলতেই হয় তাহলে বাহির থেকে কারোর দরজা খোলা অসম্ভব। আর আবার দরজা বন্ধ হলোই বা কি করে?
মিথিলা রফিক কে বললো, "তুমি একবার বেডরুম থেকে বাইরে যাবে, প্লিজ?"
রফিক বললো, "কেন?"
মিথিলা বললো, "তোমাকে একটা জিনিস দেখাচ্ছি।"
রফিক এবার একটু বিরক্ত হয়েই উঠে দরজার বাইরে গেলে মিথিলা বলে, "আমি দরজা এবার ভেতর থেকে লক করছি। তুমি দেখো খুলতে পারো কিনা।"
মিথিলা এবার ভেতর থেকে লক করে দিলে রফিক আর বাহির থেকে দরজা খুলতে পারেনা। এমনকি ধাক্কাধাক্কি করেও দরজা খুলতে সক্ষম হলোনা। এবার মিথিলা ভেতর থেকে দরজা খুলে রফিক কে বলে, "তাহলে এবার ভাবো। দরজাটা আপনা-আপনি কিভাবে খুললো? আমি নিজের চোখে দেখেছি দরজাটা আস্তে করে নিজে নিজে খুলছে।"
রফিক বললো, "সবটাই তোমার কল্পনা। শোনো, এমনিতেই সারাদিন কাজ করেছো। এখন রাত জেগে লিখছো। সেই সাথে আবার কবরের মতো কবিতা। অনেক অদ্ভুত জিনিস তোমার মাথায় ঘুরছে। তাই কল্পনা করছো তুমি। এখন লিখাটা বন্ধ করো। আর ঘুমাও। ব্রেইনটা কে রেস্ট দাও।"
কিন্তু মিথিলা জানে, দরজা খোলার ব্যাপার টা তার কল্পনা বা হ্যালুসিনেশন কিছুই ছিলোনা।
এভাবে আবার কিছু দিন কেটে যায়।
মিথিলা আবার অদ্ভুত এক স্বপ্ন দেখে। স্বপ্নটা ছিলো এমন:
রফিক মিথিলার হাতে একটা পলিথিন এ কয়েকটি ডিম দেয়, যেন মাত্র রফিক বাজার করে এনেছে। মিথিলা ডিমগুলো কে কিচেনে রেখে বেডরুমে যায় এবং আবার ফিরে আসে কিচেনে। কিন্তু, মিথিলা দেখে কয়েকটি ডিম ফ্লোরে ভেঙে একাকার অবস্থা। আর একটা ভাঙা ডিমের পাশে সৈকত বসে আছে একটা কালো রঙের হাফ প্যান্ট পড়ে খালি গায়ে। যেন ডিম ফুটে সৈকত বের হয়েছে। তার গায়ে ডিমের আঠালো অংশ চপচপ করছে। কিন্তু সৈকত কে কেমন যেন ভয়ংকর দেখাচ্ছে। যেন সে মানুষের বাচ্চা না। চোখগুলো আকৃতি তে বড়। সারা শরীর সাদা রঙের। যেন কোনো রক্ত নেই। সৈকত মিথিলা কে দেখে হামাগুড়ি দিয়ে মিথিলার দিকে আসতে লাগলো আর 'মা' 'মা' বলতে লাগলো। মিথিলা ভয়ে দিলো এক দৌড়। কিন্তু, শুনতে পায় রফিকের চিৎকার।
এটুকুতেই ঘুম ভেঙে যায়। পাশে রফিক কে দেখতে পায় ঘুমের মধ্যে গোঙাচ্ছে। যেন সে-ও ভয়ংকর স্বপ্ন দেখছে। এমনিতেই মিথিলা ভয়ের স্বপ্ন দেখেছে, তার উপর রফিকের এই অবস্থা। রফিক কে জাপটে ধরে মিথিলা জোরে চিৎকার করলো। রফিকের শরীর ঝটকা মেরে ঘুম ভাঙলো। রফিক এর এই অবস্থা দেখে মিথিলা সব ভয় ছেড়ে উঠে পানির গ্লাস এনে রফিক কে পানি দেয়।
রফিক অত সহজে ভয় পাওয়ার মতো মানুষ না। মানুষ হিসেবে রফিক মোটামুটি ধার্মিক। মুখভর্তি দাড়ি, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া, মিথিলার প্রতি তার ভালোবাসা-শ্রদ্ধা, বাবা-মা কে সম্মান করা সব মিলিয়ে রফিক কে এসব ডর ভয় কাবু করবে এমন হতে পারে না।
রফিক কে জিজ্ঞেস করলো, "খারাপ স্বপ্ন দেখেছো?"
রফিক বিড়বিড় করে "আস্তাগফিরুল্লাহ" আর "লা হাওলা আলা কুয়াতা" পড়ে বাঁ দিকে থুথু ছিটিয়ে বলে,
"ঘুমাও। কাল সকালে বলবো।"
এই বলে রফিক আয়াতুল কুরসি পড়তে লাগলো। আর নিজের এবং মিথিলার গায়ে ফুঁ দিয়ে ঘুমিয়ে গেলো।
সকালবেলা মিথিলা আর রফিক প্রায় একসাথেই বের হয় নিজ নিজ কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে। মিথিলা কে রিকশায় স্কুলের সামনে নামিয়ে দিয়ে তারপর রফিক একই রিকশায় তার অফিসের সামনে গিয়ে নামে। মিথিলার স্কুল থেকে রফিকের অফিস বেশিদূর না। এই ২০ মিনিটের রাস্তা। রফিক মাত্রই নাস্তার টেবিলে বসেছে। মিথিলা খাবার বেড়ে দিতে দিতে বললো, "আচ্ছা, কাল কি স্বপ্ন দেখেছিলে যে, এত ভয় পেয়ে গেলে? তুমি তো কখনোই এমন করোনা। আমি কি পেত্নি হয়ে তোমার ঘাড় মটকানোর জন্য এসেছিলাম নাকি?"
রফিক হাসলো। বললো, "কালকের স্বপ্নটা ভয়ংকর না, কিন্তু অদ্ভুত। তবে মনে হচ্ছিলো যেন সত্যি সত্যি ঘটছে সবকিছু। স্বপ্নে দেখলাম, আমি ডিম কিনে বাসায় ফিরে তোমার হাতে ডিম দিলাম আর আমি বেডরুমে গেলাম। এরপর ব্যালকনিতে গেলাম। রেলিং এর পাশেই দাঁড়িয়ে নিচে তাকিয়ে দেখি একটা ছোট্ট ছেলে, কালো হাফপ্যান্ট পড়া আমাদের ব্যালকনির পাশের দেয়াল বেয়ে স্পাইডারম্যানের মতো উঠছে। এটা আহামরি কিছু না। কিন্তু, ছেলেটার লুক দেখে আমার কেন যেন খুব ভয় করতে লাগলো। যেন আমাদের কাছেই ওর আশ্রয়স্থল।"
মিথিলা খাবারটা মুখের ভেতরে ঢুকিয়ে রফিকের কথা শোনার পর থ হয়ে গেলো। কোনোরকম নিজেকে সামলে রফিক কে বললো, "ইবলিশ খারাপ স্বপ্ন দেখালে যা হয় আর কি! স্বপ্ন তো স্বপ্ন ই! Anyway, বের হতে হবে আমাদের।"
মিথিলা এবার স্বপ্নের আগাগোড়া মেলাতে লাগলো। অর্থাৎ, রফিক স্বপ্নে দেখেছে সে ডিমগুলো মিথিলার হাতে দিচ্ছে। আর মিথিলাও স্বপ্নে দেখলো, রফিক তাকে ডিম গুলো হাতে দিচ্ছে। এরপর রফিক দেখলো, রফিক বেডরুমে ঢুকছে। আর এর মধ্যে মিথিলা দেখলো, মিথিলা ডিমগুলো কে কিচেনে রাখছে।
রফিক এরপর ব্যালকনিতে চলে যায়। এজন্যই মিথিলা বেডরুমে গিয়ে কাউকে দেখেনি।
মিথিলা ফিরে এসে দেখে ডিম ভাঙা, সৈকত তার পাশে বসে তার দিকে তাকিয়ে আছে এবং হামাগুড়ি দিয়ে আসছে। মিথিলা দৌড় দিলো আর রফিকের চিৎকার শুনতে পেয়েছিলো। আর এদিকে রফিক ব্যালকনি থেকে দেখলো একটা বাচ্চা ছেলে দেয়াল বেয়ে ওদের ব্যালকনির দিকে আসছে। এজন্যই রফিক চিৎকার করেছে।
একই স্বপ্ন দু'জন দেখেছে, তবে ভিন্ন ঘটনায়। মিথিলা ভাবতে লাগলো, "Something is very very wrong."
এটা স্বাভাবিক স্বপ্ন নয়। কিন্তু, সবকিছু আরো পরিষ্কার করতে মিথিলা একটা প্ল্যান করলো।
রাতে রফিক বাসায় ফিরে হাতমুখ ধুয়ে মিথিলার পাশে এসে বসলে, মিথিলা রফিক কে তার মোবাইল থেকে সৈকতের একটা ছবি বের করে দেখিয়ে বললো, "বাচ্চাটা খুব কিউট না?"
রফিক এক নজর দেখেই "আস্তাগফিরুল্লাহ। লা হাওলা আলা কুয়াতা" বলে মিথিলার হাত থেকে ফোন টা এক ঝটকায় দূরে ফেলে দিয়ে বললো, "এইটা কে? একেই তো স্বপ্নে দেখেছি।"
মিথিলা গম্ভীর গলায় বললো, "ওকেই আমি পড়াই। ওর নাম ই সৈকত। মিসেস রায় এর ছেলে।"
রফিক আর মিথিলা অবাক হয়ে দু'জন দু'জনের দিকে তাকিয়ে রইলো।
মিথিলা আবারও বলে উঠলো, "কাল রাতে স্বপ্নে তুমি যা দেখেছিলে, আমিও তাই দেখেছি। তবে আমারটায় কিছু ডিফারেন্ট থাকলেও তুমি আর আমি যে সৈকত কে দেখেছি এটাই মেইন পয়েন্ট।"
রফিক কোনো কথাই বলছিলোনা। ফ্যালফ্যাল করে মিথিলার দিকে তাকিয়ে আছে।

 গল্প/কাহিনি: "টিউশনি" (পর্ব-২)

মিথিলা বাসায় এসে পরেরদিন এর ক্লাস ম্যাটেরিয়ালস তৈরী করছিলো ল্যাপটপ এ। পাশে মিথিলার হাজবেন্ড রফিক শুয়ে ছিলো। এক মনে ফেসবুকিং করছে।
হঠাৎ মিথিলা কে জিজ্ঞেস করে, "তোমার স্টুডেন্ট কেমন পড়াশোনায়? তোমার মতো দুষ্ট না তো?"
মিথিলা ল্যাপটপ এর দিকে তাকিয়েই জবাব দেয়, "আমার স্টুডেন্ট আমার মতোই ট্যালেন্টেড আর খুব লক্ষ্মী একটা বাচ্চা।"
রফিক: ওদের ফ্যামিলি কেমন? আই মিন, বাসার পরিবেশ? আনকম্ফোর্টেবল কিছু নেই তো?
মিথিলা: না-----হ! খুব ই ছিমছাম আর গোছানো। মিসেস রায় বাচ্চা সামলে এত কিছু করার সময় কই পান কে জানে।
রফিক: সবসময়ই তো মিসেস রায়, মিসেস রায় করো। মিস্টার রায় কে কখনো দেখোনি?
মিথিলা: উহুম, না! সৈকতের বাবা কে সৈকতের ভর্তির দিন ই স্কুলে দেখেছিলাম এক নজর। এরপর আর দেখিনি৷ শুনেছি, অনেক বড় কোম্পানির সি.ই.ও। এজন্য বোধ হয় ব্যস্ত মানুষ। আবার পাশাপাশি বেইলি রোডে উনাদের নিজস্ব মালিকানাধীন মেয়েদের ড্রেসের একটা শো-রুম ও আছে। মিসেস রায় নাকি সেটা দেখাশোনা করেন। অনেক বড়লোক।
রফিক: ও, আচ্ছা। ফ্যামিলি স্ট্যাটাস ভালোই।
কিছুদিন পর শুক্রবার আসে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মিথিলা আর রফিক ঘুরতে বেরোয়৷ বেইলি রোডের রেস্টুরেন্টে ওরা লাঞ্চ করে। তারপর শপিং এ যায়। কোনো এক দোকানে, সিল্কের একটা থ্রিপিস মিথিলার খুব পছন্দ হয়। কিন্তু, প্রাইস-ট্যাগে সেই থ্রিপিস এর দাম লিখা প্রায় ৫ হাজার টাকা। ঢাকা শহরে বর্তমান বাজারে রফিক-মিথিলার মতো মধ্যবিত্ত উঠতি সংসারে ৫ হাজার টাকা দিয়ে সারা মাসের বাজার খরচ মেটানো যায়।
মিথিলা থ্রিপিস টা শুধু একবার ছুঁয়ে দেখলো। এরপর দাম দেখে সেটার দিকে আর ফিরেও তাকালো না। রফিক জিজ্ঞেস করলো, "কি? পছন্দ হয়েছে?"
মিথিলা বললো, "চলো অন্য দোকানে যাই৷ আরেকটু ঘুরে দেখি " নীরবেই চলে গেলো অন্য দোকানে।
সপ্তাহ খানেক পর মিথিলার বাসায় একটা পার্সেল আসে। মিথিলা স্কুলে ছিলো। বাসায় ছিলো রফিক। দরজায় ডেলিভারি ম্যান রফিক কে বললো, "এটা কি মিথিলা আকতার ম্যাম এর বাসা? একটা পার্সেল আছে উনার নামে।"
রফিক বললো, "জি, আমি মিথিলার হাজবেন্ড। দিন আমাকে। আমি দিয়ে দেবো।"
বিকেলে মিথিলা বাসায় ফিরলে রফিক মিথিলা কে জিজ্ঞেস করে,
"তুমি কি কোনো ড্রেস অর্ডার করেছিলে? তোমার পার্সেল এসেছে।"
মিথিলা: "আমি ড্রেস অর্ডার করবো? কই, নাতো! কিসের ড্রেস, দেখিতো!"
রফিক: "তাহলে ভুল এড্রেসে আসলো নাকি? ওই যে ওয়ারড্রব এর উপর রাখা আছে।"
মিথিলা দৌড়ে গিয়ে ড্রেস টা দেখে হাতে নিয়ে বেডের উপর ধপাস করে বসে পড়লো। এটা সেই ৫ হাজার টাকার দামের ড্রেস যেটা মিথিলা বেইলি রোডের সেই দোকানে পছন্দ করেছিলো।
আর কিছু ভাবতে যাবে, এই মুহুর্তেই মিথিলার মোবাইলের ফেসবুক মেসেঞ্জারে টুউউং শব্দ করে মেসেজ আসলো।
মিসেস রায় লিখেছেন, "ম্যাডাম, সারপ্রাইজ দিলাম আপনাকে। ড্রেস টা আপনাকে খুব সুন্দর মানাবে। প্লিজ, মানা করবেন না। বোন ভেবেই দিলাম।"
মিথিলার ভালোও লাগছে আবার অদ্ভুত ও লাগছে। ভাবতে লাগলো,
"আমি তো কয়েক সেকেন্ড ড্রেস টা হাতে নিয়ে দেখছিলাম মাত্র। আর সেই সাথে তো আরো কয়েকটা ড্রেস দেখেছি, চয়েস করেছি, ট্রায়াল দিয়েছি। কিন্তু মিসেস রায় এই ড্রেসটাই কেন আমাকে গিফট করলেন? কিভাবে জানলেন যে, এই ড্রেসটাই আমার খুব ভালো লেগেছিল?"
রফিক পাশের রুম থেকে এসে বেডরুমে এসে বসে মিথিলার পাশে। জিজ্ঞেস করে, "কি গো? ভ্যাবলার মতো বসে আছো কেন? কে দিলো খুঁজে বের করতে পারলে?"
মিথিলা সত্যিই ভ্যাবলার মতো রফিকের মুখের দিকে তাকিয়ে মিসেস রায়ের মেসেজটা দেখিয়ে বললো, "মিসেস রায় আমাকে গিফট করেছেন।"
রফিক হাসতে হাসতে বললো, "যাক, বাবা! ঈদের শপিং এর আগেই ঈদের গিফট পেয়ে গেলে! ভালোই তো কপাল তোমার।"
কিন্তু, মিথিলার মনের ঘোর কাটছেনা। কি করবে, ভেবে পায় না।
মিথিলা কি ওভারথিংকিং করছে?
নাকি সত্যিই মিসেস রায় এর মাইন্ড রিডিং এর অদ্ভুত ক্ষমতা আছে?
নাকি ব্যাপারগুলো কাকতালীয়ভাবে ঘটছে?

 গল্প/কাহিনি: "টিউশনি" (পর্ব-১)

ঢাকার স্বনামধন্য একটা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের জুনিয়র সেকশনে পড়ায় মিথিলা (ছদ্মনাম)। মিথিলার ক্লাসে হিন্দু সম্প্রদায়ের একটা ছেলে পড়ে। নাম সৈকত রায় (ছদ্মনাম)। বয়স ৬/৭ বছর। সৈকত স্টুডেন্ট হিসেবে খুব ই ট্যালেন্টেড। সৈকতের বাবা মা- মিস্টার এন্ড মিসেস রায় (ছদ্মনাম) খুব ই নিরীহগোছের মানুষ। মিস্টার রায় ঢাকার মোটামুটি পরিচিত একটা কোম্পানির সিইও এবং মিসেস রায় হাউজওয়াইফ। তাদের একমাত্র ছেলে সৈকত।
শিক্ষকতার পেশায় যতই বলা হোক না কেন সব শিক্ষার্থীদের সমান চোখে দেখতে হবে। কিন্তু, তবুও কিছু শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষকদের মনে জায়গা করে নেয়। মিথিলার মনে সৈকত ঠিক তেমন ই একটা জায়গা দখল করে নিয়েছে। সৈকত মিথিলা কে তার মায়ের পরে খুব সম্মান করতো এবং মিথিলাও সৈকত কে তার ছেলের দৃষ্টিতে দেখতো।
কারণটা অজানা। কিন্তু, সৈকতের চাহনিটাই যেন কেমন। কিছু মানুষ আছে, যারা কিছুক্ষণ কথা বললে এমনকি তাকিয়ে থাকলেই লোকেরা তাকে স্নেহ করতে কিংবা মায়া করতে শুরু করে। সৈকতের চেহারাটাও ঠিক এমন ই কিউট। যে কেউ সৈকতের সাথে ১০ মিনিট কাটালেই তাকে "লক্ষ্মী একটা বাচ্চা" বলতে বাধ্য হবে।
কিন্তু, সৈকত যে বার ভর্তি হয়েছিল সেটা ছিলো সেশনের একদম মাঝখানে অর্থাৎ একেবারে হুট করেই সৈকত ভর্তি হলো এই স্কুলে। কারণ হিসেবে মিস্টার রায় এর ঢাকায় হঠাৎ ট্রান্সফারেশন এর কারণ টা ই সবার কাছে তুলে ধরা হলো। তবে সৈকত ৬ মাসে ১ বছরের সিলেবাস শেষ করে একদম গলধকরণ করে ফেললো, যা সবাই সৈকতের "গড গিফটেড ব্রেইন" হিসেবে ধরে নিলো।
যা-ই হোক, এটা নিয়ে আর কেউ চিন্তা করেনি।
একদিন স্কুল ছুটির পর সৈকতের মা অর্থাৎ মিসেস রায় মিথিলার সাথে কথা বলতে চাইলেন।
মিসেস রায়: মে আই কাম ইন, ম্যাডাম?
মিথিলা: হ্যা, শিওর। হ্যালো, মিসেস রায়! ভালো আছেন?
মিসেস রায়: জি, ম্যাডাম। আপনি?
মিথিলা: হ্যা, আছি উপরওয়ালার বরকতে।
মিসেস রায়: ম্যাডাম, আপনার সাথে একটা ব্যাপারে ডিসকাস করার দরকার ছিল। আর একমাস পর সৈকত নতুন ক্লাসে উঠবে। সেই সাথে নতুন পড়া। আমি চাচ্ছিলাম, সৈকতের জন্য একটা হোম-টিউটর রাখতে। কিন্তু সত্যি কথা বলতে গেলে যদি আপনি একটু সৈকতকে সময় দিতেন আমাদের বাসায়! ও আপনাকে খুব পছন্দ করে। ওর ফেভারিট টিচার নাকি আপনি। বেশি না ১ ঘন্টা পড়লেই এনাফ।
মিথিলা রাজি হতে চাচ্ছিলো না। কারণ, স্কুল এর টিচারদের কোন স্টুডেন্ট কে বাসায় গিয়ে পড়ানোর নিয়ম নেই। কিন্তু, সৈকত এর উপর মিথিলার আলাদা একটা মায়া কাজ করে সবসময়। তাই, মিসেস রায় কে বললো, "আমাকে আজকের দিনটা সময় দিন। আমি আপনাকে আগামীকাল জানাচ্ছি।"
মিসেস রায় হাসিমুখে বললেন, "আমি কিন্তু আপনার অপেক্ষায় থাকবো। আর যদি আপনি রাজি হন, আমি গ্যারান্টি দেবো আপনার টিউশনির কথা এই স্কুলের কাকপক্ষী ও টের পাবেনা। আপনি আপনার পছন্দমতো পেমেন্ট ও পাবেন। এটা নিয়ে চিন্তা করবেন না।"
মিথিলা তবুও বললো, "না, না। ঠিক আছে। কিন্তু আমার ও তো শিডিউল এর ব্যাপার আছে। আমি এজন্যই আপনাকে বললাম, আগামীকাল ফাইনালি জানাবো।"
মিসেস রায় হাসিমুখে চলে গেলেন।
মিথিলা বাসায় তার হাজবেন্ড এর সাথে কথা বললে তার হাজবেন্ড জানায়, "যদি তুমি চাও আর ভদ্রমহিলা যেহেতু তোমার সিক্রেট এর গ্যারান্টি দিয়েছেন তাহলে করতে পারো। ওদের বাসা তো তেমন দূরে নয়। আর উনিও তো হাউজওয়াইফ। বাসাতেই থাকবেন। তাই মনে হয় টিউশনিটা সিকিউরড। স্টার্ট করতে পারো।"
মিথিলা পরদিন সম্মতি জানিয়ে দিলো। মিথিলা স্কুল থেকে বের হয় দুপুর ১টায়। ঠিক করা হলো, স্কুল থেকে সৈকতের বাসায় যাবে পড়াতে। তারপর টিউশনি শেষ করে একেবারে বিকেল ৩টায় বাসায় ফিরবে।
মিসেস রায় খুব ই পরিচ্ছন্ন আর পরিপাটি মানুষ। যে বিল্ডিং এ উনাদের ফ্ল্যাট, তা দেখলে বোঝা যায় মোটামুটি বড়লোক গোছের পরিবার। বড়লোক না হলে ছেলে কে এরকম স্কুলে পড়াতে পারে? তার উপর শোনা যায়, এই ফ্ল্যাট টা মিস্টার রায়ের নিজের ই। ব্যক্তিগত গাড়িও আছে।
মিথিলা যে সময়টায় পড়ায়, সেটা লাঞ্চ টাইম। তাই, বেশিরভাগ সময়েই মিসেস রায় মিথিলাকে উনাদের বাসায় আগে লাঞ্চ সেরে নেয়ার অফার করে। মিথিলা মানা করলেও মিসেস রায় মোটামুটি সুস্বাদু আর হেলদি নাস্তা দেন যাতে মিথিলার লাঞ্চের খুদাটা নিবারণ হয়।
তবে, একমাস যাবার মধ্যেই মিথিলা একটা জিনিস লক্ষ্য করে। মিথিলার যেদিন যে স্বাদের খাবার খেতে ইচ্ছে করে, সেটা না বলা কিংবা না জানানো স্বত্ত্বেও মিসেস রায় কাকতালীয় ভাবে সেদিন ওই স্বাদের খাবার ই সামনে এনে হাজির করেন। যেমন: একদিন মিথিলা সকাল থেকে কিছুই খায়নি। সৈকতের বাসায় যেতে যেতে ভাবছিলো,
"আজ বাসায় ভর্তা-ভাজির আইটেম রান্না করবে। কতদিন শুটকিভর্তা খাওয়া হয়না!"
সৈকতের বাসায় গিয়ে সোফায় বসা মাত্রই মিসেস রায় অপোজিট সোফায় বসে বললেন, "ম্যাডাম, আজ লাঞ্চ করুন আমার সাথে। বাসায় তেমন কিছু যদিওবা রান্না করিনি। কিন্তু গরমভাত, শুটকিভর্তা, ইলিশমাছ ভাজা আর বেগুনভাজা আছে। সৈকতের বাবা ঢাকার বাইরে গেছে। তাই কোনো পুরুষ মানুষ ও আসবেনা। আপনি হাতমুখ ধুয়ে ফ্রেশ হোন। আমিও এখনো লাঞ্চ করিনি। আসুন, একসাথে খাই। খাওয়াদাওয়া সেরে তারপর ওকে পড়াবেন।"
মিথিলার মনে ধাক্কা খেলো। ভাবলো, "এটা কি কাকতালীয় কোনো ব্যাপার? উনি কি করে জানলেন আজ মিথিলার ভর্তা-ভাজি খেতে ইচ্ছে করছে? নাকি মিসেস রায় মাইন্ড-রিড করতে পারেন?"
অবাক করে দিয়ে মিসেস রায় বললেন, "আমি জানি আপনি শুটকিভর্তা পছন্দ করেন। তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হোন। আমি ঝটপট খাবার রেডি করছি। লাঞ্চ না করলে কিন্তু খুব রাগ করবো।"
মিথিলা আর না করতে পারলোনা। যেহেতু খুদায় পেট চো চো করছে, তাহলে খেয়ে নেয়াটাই বেটার। ওয়াশরুমে গেলো এবং ফ্রেশ হলো। বড়জোর ২/৩ মিনিট সময় লেগেছে।
বের হয়ে দেখলো, মিসেস রায়ের টেবিলে সব খাবার খুব সুন্দর করে সাজানো। কিন্তু, একটু আগেই তো পাশের সোফায় বসে কথা বললো। তখন তো ডাইনিং টেবিল টা খালি ছিলো। এত তাড়াতাড়ি উনি খাবার গরম করে সেটা আবার পাত্রে সাজিয়ে কিভাবে টেবিলে পরিবেশন করলেন?
আবার ভাবলো, হয়তো আগে থেকেই খাবারগুলো বাটিতে রাখা ছিলো অথবা কিচেনে ছিলো খাবারগুলো। মিথিলা ওয়াশরুমে ঢোকামাত্র ই মিসেস রায় টেবিলে এনে সাজিয়েছেন।
মিসেস রায় আবারো বললেন, "তাড়াতাড়ি বসুন ম্যাডাম। খাবার ঠান্ডা হয়ে যাবে।"
মিথিলা খেতে খেতে খাবারের স্বাদ বুঝে যা বুঝলো, যেন মাত্র খাবারগুলো রান্না করে চুলা/ওভেন থেকে নামানো হয়েছে। এত তাড়াতাড়ি কিভাবে সেটা সম্ভব? মনে হয় ওভেনে গরম করা।
মিসেস রায় মিথিলা কে জিজ্ঞেস করলেন, "ম্যাডাম, আপনার বাসায় কি মাইক্রোওভেন আছে?"
মিথিলা জবাব দিলো, "না কিনিনি। তবে কেনার চিন্তাভাবনা আছে। নতুন সংসার আমাদের। টোনাটুনির সংসার যেরকম হয় আর কি!"
মিসেস রায় বললেন, "কিনে ফেলেন ম্যাডাম। খাবার ৩/৪ মিনিটে গরম করে ফেলা যায়। সময়টা বাচে আর গ্যাস খরচ ও কমলো।"
মিথিলা ১ বার আড়চোখে তাকালো মিসেস রায় এর দিকে। মিসেস রায় ইলিশ মাছের কাটাসহ কচকচ করে খাচ্ছেন। তার গলায় কোনো কাটা বিধছে না।
মিসেস রায় বললেন, "মাছ আবার আমাদের খুবই পছন্দ, বুঝলেন ম্যাডাম! আমরা প্রতিদিন ই কোনো না কোনো মাছ খাবারের আইটেমে রাখি।"
(চলবে)

 #লেখকঃ Md Rakib

আমি জানি যে অনেকেই জ্বীন দেখার সখ পোষন করেন এবং অনেকে জ্বীন ডাকার চেষ্টাও করেন, আমার পরিচিত একজন এখন প্রায় আধামরা, তার সাথে একের অধিক জ্বীনের আবাস। সে জ্বীন দেখার জন্য যা যা দরকার সব করেছে। সে বেশ কিছু হুজুর থেকে জানার কথা বলে তথ্য নিয়েছে। ফলাফল রাতে তাকে আছড়ে বিছানা থেকে ফেলে দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যদের রুমে গিয়ে চোখ বড় করে তাকিয়ে থাকে রাতের বেলা, তারা ঘুমন্ত চোখে দেখে দাড়িয়ে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে, পরিবারের অবস্থা নাজেহাল হয়ে যায়, আমার কাছে ভাল কবিরাজের সন্ধান চেয়েছে। আমি আমার যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।
আবার রাতে কখন কোথায় চলে যায় পরিবার টেরও পায়না। কয়েকবার ছাদের রেলিং থেকে তাকে নামিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। ভয়ানক হাসি, এবং কথা বলে সে পরিবারের সবার সাথে। কিন্তু ছেলেটা না , তার শরীরে অবস্থান করা জ্বীনেরা। সে অনেকদিন এ নিয়ে কাজ করেছে, অনেকে বারন করা সিত্ত্বেও সে শোনেনি। আপাতত চিকিৎসা চলছে তবে যারা চিকিৎসা করবে তাদেরও ২-১ জন আহত হয়েছে। তাকে বাসায় আটকে রাখা খুবই দায়। আর রাতে পরিবারের ঘুম হারাম বলা চলে পুরাই পসেস্ড। এখন ব্যাপার হচ্ছে। যেকোন জিনিস নিয়ে হাসি ঠাট্টা, মসকরা ঠিক না। হিতে বিপরীত হতে পারে। আপাতত এই লেখা দিয়ে বিদায় নিচ্ছি কিছুদিনের জন্য যাচ্ছি পাহাড়ে ফিরবো কিছুদিন পর আর চেষ্টা করবো পাহাড়ের কোন সত্য ঘটনা যেনে সেটা আপনাদের উপহার দেওয়ার। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন আর আমার জন্য দোয়া করবেন যেন সুস্থ হয়ে ফিরতে পারি। ধন্যবাদ……

 Real Ghost Story

সত্য ঘটনা
আজকে আমি যে ঘটনা বলতে যাচ্ছি সেটা আমার নিজের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা।
ঘটনা মূলত আনুমানিক ৩ বছর আগে আমার সাথে ঘটেছিল।
আমাদের পুকুরে মাছ ধরতে ধরতে বিকাল হয়ে গেছিলো।এরপর মাছ গুলো বাছাই এবং ব্যবসিকদের কাছে হিসাব নিকাশ করতে করতে প্রায় আটটা কিংবা সাড়ে আটটার মতো সময় লেগেছিল।এরপর নিজেদের খাওয়ার মাছ নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেই। আমাদের বাসা থেকে পুকুরের দূরত্ব প্রায় তিন মাইলের বেশিই হবে।পুকুরটি ছিলো ফাকা বিলের জোলার সাথে।বাড়িতে আসার সময় আমার নানা নানি বলছিলো আজকে থেকে যেতে।আমার নানাদের বাসা ছিল বিলের মধ্যেই। এত গুলো মাছ তারউপর রাস্তা ঘাট তেমন ভালো না।আমি তো নাচোর বান্দা। আমাকে বাড়ি জেতে হবেই।তো তারা আমার সাথে পেরে না উঠে গ্রাম্য কুসংস্কার ঘসি ( গরুর গোবরের জ্বালানী)আমার মাছের ব্যাগে দিয়ে দেয়। আমিও রওনা দেই। প্রায় অনেকটা পথ চলে আসছি।বিলের মধ্যেই মেলার ভিটা নামক এক স্থান আছে। ওখানে অনেকেই অনেক কিছু দেখেছে। ও জায়গাটা ভালো না। আমি যখন ঔ ভিটার কাছাকাছি প্রায় এসেই গেছি তখন আমি আমার সাইকেলের পিছনে ভার অনুভব করি। এত ভার যে আমি সাইকেল চালাতে পারছিলাম না। ভার আর সামলাতে না পেরে সাইকেল নিয়ে ঔখানে পরে গেলাম। গ্রাম্য ফাকা রাস্তা মানুষ জনও চলাচল নেই। আমি পড়ে গিয়ে পিছনে তাকাতেই দেখলাম একটা কালো অবয়ব আমার ব্যাগের ওখানে বসে আছি কিনা দাড়িয়ে আছে সেটা বুঝতে পারছিলাম না অন্ধকারের জন্য । কিন্তু ওটা আমার ব্যাগের ওখানে কিছু একটা করছিলো। অন্ধকারে আমি তার দেহের পরিমাপ করেছিলাম এটা কোনো ভাবেই মানুষ হবে না আর তার চোখগুলো জ্বলন্ত ছিলো এটা দেখে আমি দৌড় দিলাম এক দৌড়ে ঔ এলাকার একটা দোকানে এসে সব কিছু খুলে বললাম। তখন তাদের সাথে ঘটনাস্থলে সব কিছু যেমন ছিলো তেমনভাবে আছে কিন্তু আমার মাছের ব্যাগটা গায়েব।তো কোনো মতে বাড়িতে এসে সব কিছু খুলে বললাম। তখন আমার মা আমাকে বকাবকি করলো।এত রাতে একা একা এসেছিস কেন, গাড়িতে আসলেই পারতা।তারপর দোয়া পড়ে পানি পড়া দিলো।
এটাই ছিলো আমার সত্য ঘটনা। ঔখানে এখনো ভয় আছে। দিনে লোক চলাচল করলেও রাতে তার বিপরীত।
এই ঘটনা যদি আপনাদের ভালো লাগে আরো অনেক ঘটনা আছে সময় পেলে জানাবো।

  গল্প/কাহিনি: "টিউশনি" (পর্ব:৩) ------------------------------------------- মিথিলার কপালে এবার চিন্তার ভাজ পড়লো। আর উপায় খুঁজে না...